‘‘হঠাৎ এক দিন সন্ধ্যার পর উনি বাড়ি ফিরে আমাকে ডেকে বললেন, ‘‘তোমাকে একটা কথা বলছি, দেখো, আমি সিনিক মেয়েদের ভালবাসতে পারি না।… তবে আমি বিবাহ করেছি, তোমাকে টাকা দেব, তুমি বাপের বাড়িতে থেকো।— আমিও চলে যাব।’’
সাত পাকে বাঁধা পড়ার সাত দিনের মাথায় একজন সম্ভ্রান্ত পরিবারের পুরুষ, তাঁর রূপসী ও বিদুষী সহধর্মিণীকে অবলীলাক্রমে কথাগুলি বলে দিলেন।
সদ্য পরের বাড়িতে আসা স্ত্রী  তখন অধোবদনে স্তম্ভিত। এ আবার হয় নাকি? বিশ্বাস হচ্ছিল না, কিন্তু কথাগুলি তো তাঁর নিজের কানে শোনা। অতঃপর? মন খারাপ হল। আবার সব ঠিকও হয়ে গেল। চলতে থাকল জায়া ও পতির দুঃখ-সুখের থাকা। এক টানা বত্রিশ বছর, নিঃসন্তান অবস্থায়। বড় যৌথ পরিবারের আশ্রয় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নতুন সংসারে।
পতি আর কেউ নন— কমলকুমার মজুমদার। বাংলা সাহিত্যের অন্য ধারার সড়কে হাঁটা পথিকৃৎ পথচারী। জায়া অবশ্যই দয়াময়ী।
জাপানিরা কলকাতার বুকে যখন বোমা ফেলেছিল, দয়াময়ীর বাবা-মা এক নিরাপদ আশ্রয়ে মেয়েকে রেখে আসেন। দেওঘরের কাছে, রিখিয়ায়।
মজুমদার পরিবারের সবাই তখন সেখানেই। আসা-যাওয়া থেকে আলাপ পরস্পরের। বিবাহের প্রস্তাব আসতেই, দয়াময়ীর বাবা নাকি কমলকুমারের কাজকর্ম সম্পর্কে খোঁজ নেন। কমলকুমার উত্তর দিয়েছিলেন, ‘‘আমার কাজের যোগ্যতা মাসে পঞ্চাশ টাকার বেশি নয়।’’
শেষ পর্যন্ত ওই বিবাহই সম্পন্ন হল— ১৯৪৭ সালের মার্চ মাসে। ফ্রান্সের ম্যাপ মাথার বালিশের নীচে রেখে ঘুমনো কমলকুমারের সঙ্গে।
১৯৪৭ থেকে ১৯৭৯ তাঁদের দু’জনের বিবাহিত জীবন। দয়াময়ী চলে গেলেন মাস কয়েক আগে। অক্টোবরের ১০ তারিখ। প্রায় পঁয়ত্রিশ বছর তিনি একা কাটিয়ে গেলেন ৫০ ডি হাজরা রোডের এক ফালি ভাড়ার ফ্ল্যাটে। এ-শহরের অন্তত সতেরোটি বাড়ি বদলিয়ে পরিবারটি অবশেষে ওখানেই থিতু হয়েছিল যে!
জিজ্ঞেস করেছিলাম, অশীতিপর বৃদ্ধা দয়াময়ী যে একা কাটিয়ে গেলেন এতগুলি বছর, তার রহস্যটা কী?
বলেছিলেন, ‘‘একা? একা আবার কোথায়? কে বলে আমি একা থাকি! পাশের ঘরেই তো রয়েছেন সদাজাগ্রত সারাক্ষণের সঙ্গী মাধব। যাদবায় মাধবায় কেশবায় নমঃ। তার সঙ্গেই আমার যত কথা। অভয় পদে প্রাণ সঁপেছি। ভয় কীসের?’’
মাধবের প্রবেশ ওঁদের ঘরে ‘কিউরিও’ হিসেবে। তাও বিক্রিবাটার জন্য। দয়াময়ীর অনুরোধে অন্য সব কিউরিও কমলকুমার বিক্রির জন্য দিলেও, মাধব থেকে যান দয়াময়ীর কাছে।
শোনা যায়, দু’জনে ক্কচিৎ সিনেমা-থিয়েটার দেখতে গেলেও সঙ্গে থাকতেন মাধব। দয়াময়ীর চিরবিদায়ের অল্প আগে তাঁর ঠাঁই হয়েছিল তাঁরই ইচ্ছায় এক বৃদ্ধাবাসে। তখনও মাধব ছিলেন সঙ্গী। মাধবকে দেখতে বৃদ্ধাবাসের আবাসিকদের সে কী কৌতূহল!
একদা দামাল, চূড়ান্ত সৃষ্টি‌শীল, একগুঁয়ে আত্মমর্যাদায় ভরপুর, বোহেমিয়ান স্বামীর প্রসঙ্গ উঠলে দয়াময়ী কেবলই হয়ে যেতেন আবেগে টল টল। কখনও’বা অন্যমনস্ক হয়ে যেতেন। কিন্তু স্বামীকে নিয়ে গর্ব তাঁর এতটুকু যায়নি। এ দিকে আর পাঁচটা গড়পড়তা সুখী পরিবারের মতো নয়, তাঁর জীবন হেঁটেছে একেবারে অন্য খাতে। কৃচ্ছ্রসাধন ছিল নিত্যসঙ্গী। আর তার সবটাই ওই লেখক-শিল্পী স্বামীটির কারণে। তবু কোনও দিন তাঁকে এক বিন্দু অসহিষ্ণু হতে দেখেননি কেউ।
‘‘কথাবার্তার মাঝখানে এক সময় কমলদা বলতেন, বড়বৌ এদের চা-টা দাও। তখন পর্দার আড়াল থেকে একটি ফর্সা হাত ওমলেট ও চায়ের কাপ বাড়িয়ে দিত।’’—সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখায় প্রথম দয়াময়ীকে পাওয়া যায় এটুকুই। সৃজনশীল স্বামীর অন্তরালবর্তিনী সহধর্মিণীকে সুনীল স্থান দিয়েছিলেন অনেকটাই উচ্চতায়। বলছেন আর এক বার—‘‘আমাদের মতো ছোটদের কাছে কমলদা তাঁর স্ত্রীকে কেন লুকিয়ে রাখতেন, তা কোনও দিনই জানতে পারিনি। বহুকাল পরে বৌদি দয়াময়ী মজুমদারকে সামনাসামনি দেখি, তিনি অত্যন্ত রূপসী তো বটেই। বুদ্ধিমতী, বিদুষী। শেষ জীবনে লিখতেও শুরু করেন…।’’
হঠাৎ শেষ জীবনে লেখালেখি! কেন লেখেননি স্বামীর জীবদ্দশায়?
সহজ উত্তর, ‘‘উনি চাইতেন না। তাই। আমাকে বলতেন, তুমি লিখলে লোকে ভাববে, ব্যাটা নিজে ট্যুইস্ট করে লেখে আর স্ত্রী-র নামে সোজাসাপ্টা লেখে। দুবরাজপুর থেকে দু’জনে বে়ড়িয়ে এসে ভ্রমণকাহিনি লেখার কথা ভেবেও লিখিনি তাই।’’
প্রথম প্রকাশ্যে এলেন কমলকুমার চলে যাওয়ার পর। ড্রইং, উডকাট, কিউরিও-র সংগ্রহ আর দয়াময়ীর নিজের সূচিশিল্প— এই যুগলবন্দি প্রদর্শনীর আয়োজন করলেন স্বামীর প্রিয় ছাত্র, সহকর্মীদের নিয়ে।
‘‘প্রায়ই ওঁকে বলতুম, এত ছবি আঁকো তা কোথাও প্রদর্শনী করো না কেন?’’ চলে যাওয়ার আগে, মাত্র এক বারই এর উত্তরে বলেছিলেন, তাঁর শিল্পী ভাই নীরদকে কথা দিয়েছিলেন। কোনও দিন ছবির প্রদর্শনী করবেন না। কথা রেখেছিলেনও।
আর দয়াময়ীর নিজের লেখালেখির শুরু?
কমলকুমার চলে গেলেন। এর বেশ কি‌ছু পর ‘কৃত্তিবাস’ পত্রিকায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের অনুরোধে দয়াময়ী লেখেন তাঁদের দুজনের কথা। — ‘আমাদের কথা’। সে-লেখা প্রকাশের পর থেকে আরও ছোট-বড় পত্রিকার অনুরোধে তিনি লেখেন তাঁর দিনযাপনের বহু কাহিনি। সে-সব লেখায় ধরা পড়েছে তাঁদের ঘর-গেরস্থালির খুঁটিনাটি, কমলকুমারের পূর্ণ অবয়ব। ওই স্মৃতিলেখাগুলিকে ভর করে প্রকাশিত হয়েছে— ‘আমার স্বামী কমলকুমার’, তাঁদের পারিবারিক অ্যালবামের প্রথম আলোকচিত্র।
এক জায়গায় দয়াময়ী লিখছেন, ‘‘বাড়িতে থাকলে আমি ওনাকে কখনও দেখিনি এক মিনিট বইছাড়া থাকতে, সঙ্গে সঙ্গে চলত আঁকা অথবা লেখা।… সত্যি, দিন নেই, রাত নেই, শুধু পড়া আর পড়া। সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য কাজ, ছুটির দিনগুলো এই ভাবেই কাটত।’’
অন্য আরেকটি জায়গায় স্বামীর ভোজনপ্রিয়তার কথা বলতে গিয়ে লিখছেন, ‘‘জীবনে যে জিনিসটা সব বিষয়ে পছন্দ করতেন, সেটা হচ্ছে পারফেকশন। ছোট বড় সব বিষয়ে যার যেটুকু হওয়া দরকার যেন সম্পূর্ণ হয়, তা সে লেখাই হোক আর রান্নাই হোক। তাই পাঁচফোড়ন, রাঁধুনি থেকে আরম্ভ করে গরমমশলা পর্যন্ত কোথাও কোনও গোঁজামিল দেওয়া যেত না। …রান্নাবান্নার রিচ ধরনটাই পছন্দ হত বেশি। তবু সাদা চেহারার ভাজা মশলা ছড়ানো তরকারি বা অল্প তেলে সাঁতলানো গোটা ফোড়নের ঝোলও মাঝে মাঝে রুচিকর লাগত, তবে ভোজনের পাত্র আলো করে লালচে-সোনালি আভা যুক্ত ঘৃতপক্ক অথবা তৈলাক্ত পদই ওনার সমধিক প্রিয় বস্তু ছিল। ’’
এক বার বলেছিলাম, আপনাদের পরিবার তো ছিল শ্রীরামকৃষ্ণের অনুগামী!
উত্তরে বলেছিলেন, ‘‘সেরকম কিছু নয়, আমার শিক্ষা দীক্ষা ছিল শ্রীশ্রী সারদেশ্বরী আশ্রমকে ঘিরে, উনিও এক সময় বললেন, যদি আধুনিক হতে চাও শ্রীরামকৃষ্ণ পড়ো। ’’
শ্রীরামকৃষ্ণ পাঠে দয়াময়ীর ছেদ পড়েনি কখনও। এক সময় লিখতেও শুরু করেন ঠাকুরের জীবন ও বাণীকে ভরকেন্দ্র করে। পরমা প্রকৃতি মা সারদার জীবন ও বাণী। দৈনন্দিন জীবনে গীতার দিব্য বার্তা। শ্রীরামকৃষ্ণের অমৃতকথা সাজিয়েছিলেন কমলকুমারের সাদা-কালো ড্রইং দিয়ে। ‘মহাজীবন কথা’য় এল শ্রীরামকৃষ্ণ ও শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর বাণীগুলি পিঠোপিঠি রেখে।
পাশাপাশি চলতে থাকে কমলকুমারের অপ্রকাশিত, অগ্রন্থিত লেখার প্রকাশ। পুরনো লেখার পুনর্মুদ্রণ।
—কখনও জিজ্ঞেস করেছেন তাঁর ভাষায় এত কাঠিন্য ছিল কেন?
—করিনি আবার! শুরুর দিকে প্রায়ই বলতাম— তোমার লেখা পাঠক বুঝবে কী করে? এত খটমট ভাষা।
উত্তর দিতে গিয়ে নাকি দয়াময়ীর হাতে কমলকুমার ধরিয়ে দিয়েছিলেন প্রাচীন বাংলা একটি বই। যা দেখে তিনি তো হতবাক। এ তো সেই গদ্যভাষা, যে ভাষায় তাঁর স্বামী লেখেন, যে ভাষা বাঙালি ভুলে গিয়েছে। যে ভাষা গরিমার ভাষা। যখন এ-ঘটনা শুনিয়েছিলেন, তত দিনে আর বইটির নাম স্মরণে ছিল না। বলেছিলেন, ‘‘যত দূর মনে হয়, বইটি ছিল ‘ব্রাহ্মণ্যযুগের ...’।’’
—কমলকুমারের প্রতিটি লেখার শুরুতে কেন এত রামকৃষ্ণ-স্মরণ?
—উনি বলতেন, ব্যাটারা ঠাকুর মানে না। অন্তত আমার লেখা পড়ার সময় একটু মানুক।
স্বামীর ভাষার মধ্যে এক সময় ডুবতে ডুবতে নিজেও যে কোন ফাঁকে তার ধারাটি মনে ধরে ছিলেন, দয়াময়ী বোধ হয় নিজেও জানেন না! সেই ধারণ এতটাই পোক্ত হয়েছিল যে, কমলকুমারের একটি অসমাপ্ত গল্প শেষ করেছিলেন নিজের কলমে। গল্পের নাম ‘পিঙ্গলাবৎ’।
এক বার বলেছিলাম, তখন তো বিখ্যাত সব মানুষজন আপনার স্বামীর অনুরাগী। ওঁদের সঙ্গে দেখা হত আপনার?
অবাক করে দিয়ে বলছিলেন, ‘‘উনি বাড়িতে কাউকে আসতে বলতেন না। প্রথম দিকে বাড়ির ঠিকানা কাউকে দিতেন না। এক বার সত্যজিৎ রায়, চঞ্চলকুমার চট্টোপাধ্যায় আমাদের হ্যারিসন রোডের বাড়িতে হঠাৎ আসেন। দেখা হত কবি বিষ্ণু দে-র সঙ্গে, ইন্দ্রনাথ মজুমদার-এর ‘সুবর্ণরেখা’য় নিয়মিত যেতেন।’’
—‘দ্য রিভার’ ছবির শ্যুটিং-এ কলকাতায় এসে রেঁনোয়া ওঁর সঙ্গে দেখা করেন, জানতেন?
—হ্যাঁ। উনি তখন শিক্ষকতা করেন। ওঁর সাউথ পয়েন্ট স্কুলে গিয়ে দেখা করেন সাহেব। তার পর আমার স্বামী যান তাঁর হোটেলে।
এমনই ছোট্ট ছোট্ট কাহিনি জুড়ে দয়াময়ী গেঁথে গিয়েছেন কমলকুমারের জীবনকথা। তাঁর অসমাপ্ত রচনাবলি। আর এই বিপুল সম্ভারের আড়ালে ক্রমেই যেন নিজেকে এক ঘেরাটোপে বেঁধে রেখেছেন এক বিদুষী নারী। মাঝে মধ্যে অবশ্য আচম্বিতে বেরিয়ে এসেছে তাঁর জীবন, তাঁর ত্যাগ, তাঁর সহনশীলতার অত্যাশ্চর্য সব ঝলক।
—ওঁর নেশাগ্রস্ত হয়ে রাতে ফেরাকে কী ভাবে দেখেছেন?
—প্রথম দিকে জানতে পারিনি। পরে বারণ করেছি। লাভ হয়নি। তাই মেনে নিয়েছি। শেষের দিকে তো বাড়িতেই খেতেন। অসুস্থও হয়ে পড়লেন। ঠাকুরের কথা মানি— সহ্য করো, সহ্য করো।
এক বারের কথা লিখেছেন দয়াময়ী, ‘‘এক দিন, সেটা হবে গ্রীষ্মকাল। ভারী গরম। উনি মশারির মধ্যে ঢোকার আগে ঘরের দুটো দরজা খুলে দিলেন।  আমি আপত্তি জানালে বললেন, ‘আমি তো জেগে থাকব, ভয় নেই। ঠিক সময়ে বন্ধ করে দেব। আলো জ্বলছে, তার পর গরমও খুব। আমি পাশের ঘরের আলো নিভিয়ে শুয়ে পড়লুম। আমার যখন ঘুম ভাঙল রাত তখন থম থম করছে। অজস্র ঝিঁঝিঁর ডাক। মাঝে মাঝে শেয়ালের ডাক শোনা যাচ্ছে। দুটো ঘরের মাঝখানে আরও একটা দরজা ছিল। চেয়ে দেখি উনি নাক ডাকিয়ে ঘুমোচ্ছেন, দু’দিকে দুটো দরজা খোলা। ভয়ে আমি সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছি না। পা দুটো কাঁপছে। ওনাকে ডাকার মতো স্বর গলা দিয়ে বেরচ্ছে না। মনে হচ্ছে, বাড়ির ভেতরে কে বা কারা যেন ঢুকেছে, কী যে করব বুঝে উঠতে পারছি না। একটু পরেই দেখি মস্ত মোটাসোটা একটা বেড়াল আমার পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেল। আমি যেন একটু ধাতস্ত হলাম।’’
শেষের দিকে বয়সের ভারে ন্যুব্জ দয়াময়ী হয়ে পড়লেন বিকারগ্রস্ত। মাঝে মাঝেই কাছের মানুষদের রাত-বিরেতে ফোন করতেন। আতঙ্কিত গলায় কখনও বলতেন, ‘‘পাশের বাড়ির কাজের মেয়েটিকে সবাই মারছে।’’ কখনও’বা, ‘‘দূরের ছাদ-এ ধোঁয়া-আগুন দেখতে পাচ্ছি। দমকলে খবর দিতে হবে। এখুনি।’’ খবর নিয়ে দেখা যেত, কোথাও কিচ্ছুটি হয়নি।
অসুস্থ হয়ে গেলেন হাসপাতাল। সেখান থেকে ফিরে স্বেচ্ছায় বৃদ্ধাবাস। নির্বান্ধব শুষ্ক ঘরে কয়েক দিন মাত্র কাটিয়ে দয়াময়ী যখন ওই বৃদ্ধাবাসে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করছেন, তালাবন্ধ ৫০ ডি হাজরা রোডের এক চিলতে ফ্ল্যাটে তখনও ‘রোজ উড’-এর দুটি সেল্ফ ধরে রেখেছিল উনিশ শতকের শেষ নিশানা, আর দেওয়ালে ঝুলছিল কমলকুমারের আঁকা ‘এসো মা আনন্দময়ী’।
সে ছবি বুঝি তখন বাঙ্ময়— অমৃতলোকে পাড়ি দেওয়া দয়াময়ীর কানে কানে বলছে, তাঁরই উপাস্য শ্রীরামকৃষ্ণের অমৃতবাণী— ‘যশ চাই না। আমার মন তোমার পাদপদ্মে বাস করুক।’

http://www.anandabazar.com/supplementary/patrika/special-write-up-by-prasanta-maji-on-dayamayee-majumdar-1.284288