একজনের কথাই শুনতাম, সিনহাদার
কলকাতা বুধবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫
পরিমল দে: আমি একেবারেই ভাল নেই। দু দিন আগে ছোট ভাই পৃথ্বীশ হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। আমাদের কিছু করার সুযোগ দেয়নি। সেই যন্ত্রণা ছিলই। তারপর মঙ্গলবার আবার দুঃসংবাদ। আমাকে আবার বিভ্রান্ত করে দিল। সিনহাদা। এই নামেই ডাকতাম। সিনহাদা আর নেই। ছোট ভাইয়ের পর বড়দাও চলে গেলেন। খুব কাছ থেকে দেখেছি। চেনার সুযোগ পেয়েছি। তা থেকে বুঝেছি, ফুটবলার হিসেবে তো বটেই, মানুষ হিসেবেও উনি কত ওপরে ছিলেন। খারাপ লাগছে, এই সময়ে সিনহাদার পরিবারের পাশে থাকা উচিৎ ছিল। কিন্তু পারছি না। তাই কষ্ট হচ্ছে। ইস্টবেঙ্গলে আমি যখন যাই, তখন সিনহাদা গোটা দলের অভিভাবক। পাশাপাশি আমাদের সবার বন্ধুও বটে। যেকোনও সমস্যায় পড়লে ওঁর কাছে যাওয়া যেত। নিজেদের মধ্যে সমস্যা হলে সবার আগে ওঁর কাছে যেতাম। আর কর্তাদের সঙ্গে যদি মতবিরোধ হত, উনি সবার আগে যেতেন আলোচনা করতে। তাই আমরা সবাই ওঁেক ভালবাসতাম, ওঁর ওপর নির্ভর করতাম। সেই সময় আমাদের একটা গ্রুপ ছিল। আমি, শান্ত মিত্র, সুকুমার সমাজপতি, সুভাষ ভৌমিক আর সিনহাদা। যখন ইস্টবেঙ্গলে এসেছি, অনেক কোচকে পেয়েছি। কিন্তু তার মধ্যেও সিনহাদার আলাদা জায়গা ছিল। এমনকী পি কে ব্যানার্জিও ভোকাল টনিক দেওয়ার জন্য মাঝে মাঝেই সিনহাদাকে দায়িত্ব দিতেন। আমরা ড্রেসিংরুমে একজনের কথাই শুনতাম, সিনহাদার। একজন ফুটবলারের কাছে ড্রেসিংরুমের আলাদা তাৎপর্য থাকে। ড্রেসিংরুমটাই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। সেটার পরিবেশ হালকা, সহজ রাখতেন সিনহাদা। মাঠের ভেতরের সমস্যা তাই মিটিয়ে দিতেন ড্রেসিংরুমে। কত বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে গেছি। সেই সময় সিনহাদা বুক দিয়ে আগলে রাখতেন। আমাদের ওরকম দুর্ধর্ষ দল থাকলেও খেলায় হার–জিৎ থাকতই। স্বাভাবিক ভাবেই আমাদেরও হারতে হয়েছে। আর ভাল দল বলে হারের যন্ত্রণাটা আরও বেশি ছিল। ওই সময়গুলোয় মানসিক ভাবে আমাদের চাঙ্গা করতেন। বলতেন, যাদের বউ আছে, তারা বউয়ের কাছে চলে যাও, যাদের বউ নেই, তারা বান্ধবীর কাছে চলে যাও। কোনও চাপ রেখ না। নিজেকে হালকা রাখ। জানি না, আজ হালকা হওয়ার জন্য কার কাছে যাব।
http://aajkaal.in/sports/%E0%A6%8F%E0%A6%95%E0%A6%9C%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%95%E0%A6%A5%E0%A6%BE%E0%A6%87-%E0%A6%B6%E0%A7%81%E0%A6%A8%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%AE-%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A6%B9%E0%A6%BE/
No comments:
Post a Comment