মহালয়া...
কাল সকালেই চাদ্দিকে "মা মা" বলে লাফালাফি শুরু হয়ে যাবে। সে যাক, বিষয়টা যে খুব খারাপ তা বলছিনা( আসলে ভাবাবেগ নিয়ে ভয়ে আছি, তাই ...)। বিষয়টার অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে জটিল আলোচনা থাক। আমার উদ্দেশ্য শুধুই পুরানঘটিত। দুর্গাদেবী এসে যে অসুর মারলেন সেটার বৃত্তান্ত সবাই মোটামুটি জানেন। কিন্তু ওই মোটামুটি ব্যাপারটাকে আমি আমার মতো করে বলতে চাই। যারা জানেন তাদের অভিনন্দন, আর যারা জানেন না তাদের... তাদের... ইয়ে তাদেরও অভিনন্দন। আমি খুব ভালো লেখক নই, তাই কেউ যদি দুর্ঘটনাক্রমে পড়ে ফেলেন, এই পর্যন্ত পড়েই সতর্ক হন। উচ্চসাহিত্য আশা করা মোটেই উচিত হবে না।
(1)
বিষয় হল, দুর্গাদেবী অসুর মারছেন। এবং আমরা সবাই জানি মহিষাসুর এর body যতই সালমান খান এর থেকেও ভালো হোক না কেন, যতই সে ক্ষাত্রতেজ দেখিয়ে থাকুক না কেন, যেহেতু সে দেবতা পিটিয়েছে তাই সে খারাপ। তাই শেষ পর্যন্ত ঘরে বসে তেজ উদ্গীরন করে একজন রুপবতী বীরাঙ্গনাকে মান বাঁচাতে পাঠানো। সে ঠিক আছে। কিন্তু গল্পটা কিন্তু এরকম নয়। কারন কলিযুগের নিয়ম যদি বলবত তখনো হত, তাহলে বেচারা মহিষশাবকটি আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ নিশ্চই পেত(অবশ্য দুর্গাদেবী যদি কলিযুগে আমেরিকা সাজতেন তাহলে হয়ত সাদ্দাম এর মতো গদ্দাম করেই ঝুলিয়ে দিতেন, তবে এক্ষেত্রে যেহেতু লেখাটা আমার তাই assume করছি দেবিজি আমেরিকা হতেন না)।
पुरासुरोबरौ रौद्रौ जगत्क्षोभकराबुभौ/ रम्भश्चैब करम्भश्च द्बाब्स्तान् सुमहाब्लौ/ तावपुत्र च देबर्षे पुत्रार्थ तेप्तुस्तप/ बहुन बर्षगणान दैत्यौ स्थित पन्चनदेजले/ तत्रैक जलमध्यस्थो द्वितियप्यग्निपन्चमी/ करम्भश्चैब रम्भश्च यक्ष मालवट॑ प्रति/ एक॑ निमग्न॑ सलिले ग्राहरुपेन बासब/ चरणाभ्या॑ समादाय निजधान यथेच्छया...
এই পর্যন্ত আপাতত enough. অর্থটা দেখে নেওয়া যাক ঃ
প্রাচীন কালে রম্ভ ও করম্ভ নামে দুই অসুর ছিল। যারা খুব বলবান ছিল। তাদের পুত্র ছিল না বলে তারা তপস্যা করতে গেলো পঞ্চনদে। একজন অগ্নিতে আরেকজন জলে দাঁড়িয়ে মালবট যক্ষ কে স্মরণ করছিল। ইন্দ্র কুমীর সেজে এসে করম্ভকে, যে কিনা জলে দাঁড়িয়েছিল, তাকে জলের তলায় টেনে মেরে ফেললো।যে অগ্নিতে তপস্যা করছিল সেই রম্ভ ভাইয়ের এরকম মৃত্যুতে ক্ষেপে গেলো।
infact এই রম্ভ হোল মহিষাসুর এর বাপ।
আপাতত আমার প্রশ্নঃ
১) মহিষাসুর তো না হয় খুব খারাপ, কিন্তু ইন্দ্র কোথাকার মহাপুরুষ? দুজন তপস্যা করছিল দেখেই ইন্দ্রানুভুতিতে এমন আঘাত লেগে গেলো যে একজনকে cheating করে লুকিয়ে এসে মেরে ফেলতে হল??
২) যে ইন্দ্র এইরকম কাপুরুষ এবং বদমাইশ সে যদি দেবতাদের রাজা হয়, তাহলে তাকে মহিষাসুর পেটালেই দোষ কেন হবে?? মহিষাসুর তো অন্তত যুদ্ধ করেছে, ইন্দ্রের মতো দুইনাম্বারি তো করেনি।। তাহলে??
(2)
এবার একটু পরবর্তীতে আসি।
ततस्तु देबा महिषेन निर्ज्जिता स्थानानि स॑त्यज्य सबाहनायुधा/...... ..... ...../तस्माच्च जाता तरलायताक्षी कात्यायनी योगबिशुद्धदेहा...
অর্থ ঃ মহিষাসুর বড় হয়ে গেছে। আর স্বাভাবিকভাবেই দেবতাদের খুব পিটাচ্ছে। দেবতারা বেধড়ক পিটুনি খেয়ে ব্রহ্মার কাছে গিয়ে কান্নাকাটি করায় ব্রহ্মা তাদের নিয়ে শ্রী বিষ্ণু যেখানে শ্রী অনন্তনাগের উপর শ্রী ঘুম দিচ্ছিলেন সেখানে গেলে দেখা গেলো মহাদেব ও সেখানে উপস্থিত। কেন উপস্থিত সেটা জানা যায় না। ডুগডুগি সারাতেও এসে থাকতে পারেন। মোটকথা সেটা তাদের ব্যাক্তিগত ব্যাপার বলেই মনে করছি। যাই হোক তারপর ক্রন্দনরত বীর দেবতাদের মারধর খেয়ে পালাবার ঘটনা শুনে ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শিব মিলে তেজ উদ্গীরন করে আয়তলোচনা সুন্দরী দেবী কাত্যায়নীর সৃষ্টি করলেন মহিষাসুর দমনকল্পে।
এখান থেকে আমার প্রশ্ন শুরু...
১) বিষ্ণু এতো উত্তেজিত হলেন কেন? পুতুল সরকার নড়ে যাচ্ছে দেখে??এখানে অনেকে বলতে পারেন অসুররা খারাপ। আমার বক্তব্য হোল কাতটা খারাপ?? যে বিষ্ণু ছক করে দানবদের দিয়েও সমুদ্রমন্থন করালেন তারপর just জোচ্চুরি করে তাদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করলেন সেই cheating ভালো হোল কিসে?? বলী বেচারা দিব্যি ধার্মিক। খালি বাহুবলে ইন্দ্রকে তারিয়ে দিয়েছিল বলেই তাকে পাতালে পুতে দেওয়া হল, সেটাও জোচ্চুরি করে। তাহলে খারাপ কে এবং কতটা?? ক্ষাত্রতেজ দেখানো বেশী খারাপ নাকি জোচ্চুরি??
২) না হয় মানলাম মহিষাসুর বরলাভ করে পুরুষের অবধ্য। কিন্তু তাই বলে একটা মহিশাসুরকে মারতে এতগুলো বৃহৎ দেবতার তেজ লাগলো কেন?? এটা না মানার কারনই নেই যে ইন্দ্ররা pure অপদার্থ। ব্রহ্মা বেচারা বৃদ্ধ। কিন্তু বিষ্ণু বা শিব কারো একার ক্ষমতা হল না যাতে একার তেজ দিয়ে এমন একটি বীরাঙ্গনা সৃষ্টি করা যায় যে কিনা অসুর দমনে সমর্থ?? তাহলে এটা ধরে নেওয়া কি খুবই অস্বাভাবিক যে, আসলে কাব্যের আড়ালে মহিষাসুরকেও সপ্তরথী বেষ্টিত অভিমন্যু style এ খতম করা হয়েছিলো?? সিবিআই তদন্ত চাওয়া কি অন্যায় হবে??..
(3)
তাহলে উপরের দুই পর্বে এটা অন্তত পরিষ্কার যে মহিষবাবু এমন কিছু করেননি যা কিনা দেবতারা খারাপ বলতে পারেন। কারন তারা নিজেরাই ওর থেকে অনেক বেশি বেশি জোচ্চুরি করে বসে আছেন। এবার কথা হল এই সময় আরেকটা কথা উঠবে যে , স্বর্গে তো ভাই ইন্দ্র তাঁত বুনে খাচ্ছিল মহিষাসুর কেন তাকে গিয়ে মারল? মহিষাসুর এর জন্য তো পাতালরাজ্য ছিল।
এখানে পাল্টা প্রশ্ন মহিষাসুরের কাকাকে ইন্দ্র মারল কেন? সে বেচারা তো পুত্রার্থে তপস্যা করছিল??
আচ্ছা বাপু যদি ধরে নিই দানবদের দেবতারা যখন খুশি মারতে পারে লুকিয়ে চুরিয়ে তাতে দোষ নেই, কারন দানবরা অত্যাচারী, তাহলে আরেকটা প্রশ্ন কংশকে কি অত্যাচারী বলা যায় না?
জবাব আসবে নিশ্চই যায়। ও ব্যাটা তো শিশুহত্যাকারী। নিজের গদি বাঁচাতে নিস্পাপ শিশুদের খুন করছিল। ও ব্যাটা তো দানব। দানবদের সেই কারনেই তো মারা উচিত। সেইকারনেই তো... ইত্যাদি ইত্যাদি...
এখানে একটা গল্প ছোট করে বলি। কোন এক দেব দানবীয় যুদ্ধে সব দানবকে মেরে ফেলেন ইন্দ্র তথা দেবতারা। তারপর দানবীমাতা দিতি তার স্বামী কশ্যপ এর থেকে ইন্দ্রের থেকেও শাক্তিশালী পুত্রবর চান এবং पौर्न्मसि ब्रत ব্রত করেন। অবশেষে যখন পুত্র জন্মাবার ৩ দিন বাকি, দিতি পা ধুতে ভুলে যান। সেই সুযোগে ইন্দ্র দিতির গর্ভে প্রবেশ করেন।
বলুন তো কেন? দিতির গর্ভের পুত্রটি যেহেতু তার চেয়ে শক্তিশালী তাই তার গদি বাঁচাতে তাকে হত্যা করতে! এবং ব্জ্র দ্বারা সেই গর্ভস্থ শিশুটিকে ৭ টুকরো করেন। তাতেও তারা মরছে না দেখে প্রত্যেকটি টুকরোকে আরও ৭ টুকরো করেন!! তারপর তারা কাঁদছে দেখে म रुदद्ध्म বলে তাদের কণ্ঠ বন্ধ করেন!!!
তাহলে এবার আমার প্রশ্ন ঃ
১) কংশ যদি বর্বর হয় তাহলে ইন্দ্র কি??
২) শ্রী কৃষ্ণ যদি তার শ্রী মামা কে শাস্তি স্বরুপ হত্যা করতে পারেন, তাহলে মহিষাসুর ইন্দ্রকে শাস্তিস্বরূপ কান মুলে পিটালে সেটা তো অত্যন্ত ভালো কাজ বলেই পরিগনিত হওয়া উচিত, তাই নয় কি??
(4)
তাহলে এখনো পর্যন্ত যা দেখা গেলো তাতে মহিষাসুর এর বিরুদ্ধে দেবতারা একমাত্র নিজেদের দুর্গতি ছাড়া আড় কারো দুর্গতির অভিযোগ তুলতে পারছেন না। এবার আমার বক্তব্য দেবী দুর্গার বীরত্ব নিয়ে... এখানে একটা কথা বলে রাখা ভালো যে আমি দেবী দুর্গার নারী হিসাবে সাহসিকতাকে বেশ একটা ভালো রুপক মনে করি। যে মেয়েরা নিজেদের দুর্বল বলে ভেবে ভয়ে আধমরা থাকেন তাদের এটা থেকে এই শিক্ষাটুকু নেওয়া উচিত যে অস্ত্র ধরতে জানলে দৈহিক দুর্বলতা কোন ব্যাপারই না। কিন্তু মুশকিল হোল সেই নারী যখন জয়ী হবার পর "পুরুষের তেজ দ্বারা নির্মিত" বলে খ্যাত হন তখন সেটার সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে বিশ্লেষণ করতেই হয়। ;)
আগেই বলেছি কোন দেবতার এমন সাধ্য হয় নি একার তেজে এমন একটি নারী সৃষ্টি করতে যিনি মহিষাসুরকে বধ করতে পারেন, তাই "অনেকে মিলে সপ্তরথী বেষ্টিত অভিমন্যু এর মত মহিষাসুরকে বধ করেনি একটি নারীর টোপ দিয়ে" এই সন্দেহ একে বারে ফেলে দেবার মত নয়। ;)
এবার আসল কথায় আসি। এতজনের তেজ দ্বারা সৃষ্ট দেবী কিন্তু একা যুদ্ধ করেন নি।
ततोट्ठहास॑ मुमुचे नाद्रिशे बाधता॑ गते/ हास्यात् स्मुद्भब॑स्तस्या भुता नानाबिधाद्भुता/ ......./ सा नैर्भुतगनै देबी सार्द्ध तददानबबलम॑/ सातयामास चाक्रस्य यथा सय॑ महाशनि...
অর্থাৎ দেবীর হাসিতে ভুত উৎপন্ন হল যাদের বিকট দেখতে। এবং তাদের নিয়ে দেবী মহাতেজে অসুরদের আক্রমণ করলেন। :) :P
অবশেষে সব অসুর মারা গেলে মাহিশাসুর নিজে যুদ্ধে আসলেন।
देब्या महौजा महिसासुरस्तु ब्य्द्रबयद् भुतगनान् खुराग्रे/......./बज्र॑सुरेन्द्र्स्य च बिग्रहेस्य मुक्त॑ सुसूक्षमत्यमुपाजगाम् ...
অর্থাৎ সব অসুর মারা যাচ্ছে দেখে মহিষাসুর নিজেই যুদ্ধে এলেন। দেবীর ভুতদের পিটিয়ে তাড়িয়ে দিলেন। তাই দেখে দেবী কুপিতা হয়ে শুল নিক্ষেপ করলেন এবং যা মহিষাসুর ব্যর্থ করল। এইভাবে একে একে সব অস্ত্র এমনকি ইন্দ্রের বজ্র পর্যন্ত টুকরো করে দিল মহিষাসুর। ;) এখান থেকে ছোট্ট turn.. পুরুষালী অস্ত্র ব্যর্থ হবার পর দেবী যেটা করলেন তার বর্ণনা যেভাবে দেওয়া হয়েছে লিখে দিলাম...
सन्तज्य सि॑ह महिसासुरस्य दुर्गाधिरुढा सहसेब प्रिस्ठ्म्/ प्रिस्ठास्थितया महिसासुरपि पोप्लुयते बीर्यमदाम्ऱडान्याम/ सा चापि पदभा॑ म्ऱ्दुकोमलाभ्या॑ ममर्द त॑ क्लिन्नमिबाजित॑ हि/ स मुझ्यमानो धरनीधराभओ देब्या बलि हीनबलो बभुब...
অর্থাৎ সব অস্ত্র ব্যর্থ দেখে দেবী সিংহ ছেড়ে মহিষাসুর এর পিঠে উথে বসলেন... ;) দৈত্য যখন তাতেও শান্ত হল না তিনি তার "কোমল" পা দিয়ে মহিষাসুরের "পিঠ" "মর্দন" করতে লাগলেন। তাতে মহিষাসুর "হীনবল" হয়ে গেল। 3:) তারপর দেবী শুল দিয়ে তাকে আঘাত করলেন... ইত্যাদি।
এবার আমার প্রশ্নগুলো ঃ
১) এতগুলো পরম দেবতার তেজ অস্ত্র পাবার পরও ভুতবাহিনী লাগলো??
২) সমস্ত বিরাট বিরাট অস্ত্র, যেমন শুল, কালদন্ড, গদা, বজ্র ইত্যাদি ইত্যাদি এমনকি স্বয়ং বিষ্ণুর চক্র পর্যন্ত যে অনায়াসে ব্যর্থ করে ভেঙ্গেচুরে একাকার করে দিল সে যে যে মুহূর্তে সুন্দরী নারীর "কোমল" পায়ের দ্বারা "মর্দিত" হল অমনি "হীনবল" হয়ে গেলো কিভাবে?? :P
[by the way.. "কোমল" "মর্দন" "হীনবল" কথাগুলি original script এ ঠিক ওইভাবেই আছে যেভাবে আমি লিখেছি।]
(5)
বলা হল তিনি জগজ্জননী। এখানে মুশকিল। কারন শাস্ত্র অনুযায়ী অসুররা জগতের বাইরের কেউ না। তাই জগজ্জননী হতে গেলে অসুরদেরও জননী হতে হয়। অনেকে বলবেন ... সেইকারনেই দুর্গা অসুরকে বধ করেন নি... তাহলে আসুন দেখি original script কি বলে... ;)
निस्क्रान्तमात्र॑ ह्र्द्ये पदा त॑ आहेत्य स॑ग्रेह कचेशु कोपात्/ शिर: प्रचिछ्येद बरासिनस्य हाहाक्रित॑ दैत्यबल॑ तदात्भुत॑..
অর্থাৎ পুরুষটির হৃদয়ে চরণ দ্বারা আঘাত করে চুলের মুঠি ধরে শ্রেষ্ঠ তরবারি দিয়ে তার মুণ্ডু কেটে ফেলেন। মাহিশাসুর কে মারা যেতে দেখে দৈত্যরা হাহাকার করতে লাগলো।
এখানে আমার তেমন কোন প্রশ্ন নেই। যুদ্ধ করতে এসেছেন। শ্ত্রুবধ করেছেন। ঠিক আছে। কিন্তু "জননী" যাই শাস্তি দিন না কেন, সন্তানকে মেরে ফেলতে পারেন কি?? আরও এমন এক সন্তান যে তার কাছে তেমন কোন দোষই করেনি। আগের পর্ব দেখলে বোঝা যাবে দেবতাদের তুলনায় সে সাক্ষাৎ মহাপুরুষোচিত নায়ক।
অনেকে বলবেন না এক্ষেত্রে "জননী" তার সন্তান কে ক্রুদ্ধা হয়ে খুন করেছেন (মহিষাসুর বিরাট দোষী একথা আগের পর্বগুলো যারা পড়েছেন তারা নিশ্চয়ই বলবেন না) তাহলে দেবতাদেরই একটা ঘটনা উদাহরন হিসাবে দেখাই।
সূর্যের প্রথম স্ত্রী দুই পুত্র সন্তান (মনু এবং যম) রেখে বাপের বাড়ী চলে যান। যাবার আগে তারই মতো হুবহু দেখতে একজনকে রেখে যান। তার নাম ছায়া। তার দুই পুত্র (সাবর্ণি এবং শনি) হবার পর সে সতীনপুত্রদের অবহেলা করতে থাকে। তাই যম একদিন খেপে গিয়ে তাকে লাথি মারার হুমকি দেয়। তাতে ছায়া যমকে অভিশাপ দেন যে "যমের পা খসে পড়ুক"।
তাতে যম কাঁদতে কাঁদতে গিয়ে সূর্যকে নালিশ করে বলে "হে পিতা, কোন মা কি কখনো সন্তানের ক্ষতির অভিশাপ দিতে পারেন?" সূর্যবাবু সেটা মেনে নিয়ে এসে ছায়ার চুল ধরে পেটান।
একথা বলার কারন একটাই, এটা দেখানো যে দেবতারা নিজেদের বেলায় খুব বোঝেন যে মা অভিশাপই দিতে পারেন না সন্তানকে, মেরে ফেলা তো প্রশ্নই নেই।
তাহলে দেবী দুর্গা কেমন করে "জগজ্জননী" হলেন?? :)
আপাতত সব দেখেশুনে আমি বুঝলাম যে এই সম্পূর্ণ ব্যাপারটা মহিশাসুরের বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র। এবং সুষ্ঠু নিরপেক্ষ বিচারে দুর্গা দেবী কিছুতেই পুজ্যা এবং "জগজ্জননী" হতে পারেন না। "দুর্গতিনাশিনী" যে কিসের দুর্গতি নাশ করলেন, সেটাওপরিষ্কার নয়। দেবতারা ষড়যন্ত্র করে একজন মহান বীর ( যার খালি একটু মেয়েঘটিত ইয়ে ছিল, সে তো সব দেবতারই আরও বেশী বেশী ছিল) এর নামে কুৎসা করেছেন। এবং আমি সেই সর্বহারা মহিষের ছানার প্রতি তীব্র সহমর্মিতা জানিয়ে আমার বক্তব্য শেষ করছি।
(1)
বিষয় হল, দুর্গাদেবী অসুর মারছেন। এবং আমরা সবাই জানি মহিষাসুর এর body যতই সালমান খান এর থেকেও ভালো হোক না কেন, যতই সে ক্ষাত্রতেজ দেখিয়ে থাকুক না কেন, যেহেতু সে দেবতা পিটিয়েছে তাই সে খারাপ। তাই শেষ পর্যন্ত ঘরে বসে তেজ উদ্গীরন করে একজন রুপবতী বীরাঙ্গনাকে মান বাঁচাতে পাঠানো। সে ঠিক আছে। কিন্তু গল্পটা কিন্তু এরকম নয়। কারন কলিযুগের নিয়ম যদি বলবত তখনো হত, তাহলে বেচারা মহিষশাবকটি আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ নিশ্চই পেত(অবশ্য দুর্গাদেবী যদি কলিযুগে আমেরিকা সাজতেন তাহলে হয়ত সাদ্দাম এর মতো গদ্দাম করেই ঝুলিয়ে দিতেন, তবে এক্ষেত্রে যেহেতু লেখাটা আমার তাই assume করছি দেবিজি আমেরিকা হতেন না)।
पुरासुरोबरौ रौद्रौ जगत्क्षोभकराबुभौ/ रम्भश्चैब करम्भश्च द्बाब्स्तान् सुमहाब्लौ/ तावपुत्र च देबर्षे पुत्रार्थ तेप्तुस्तप/ बहुन बर्षगणान दैत्यौ स्थित पन्चनदेजले/ तत्रैक जलमध्यस्थो द्वितियप्यग्निपन्चमी/ करम्भश्चैब रम्भश्च यक्ष मालवट॑ प्रति/ एक॑ निमग्न॑ सलिले ग्राहरुपेन बासब/ चरणाभ्या॑ समादाय निजधान यथेच्छया...
এই পর্যন্ত আপাতত enough. অর্থটা দেখে নেওয়া যাক ঃ
প্রাচীন কালে রম্ভ ও করম্ভ নামে দুই অসুর ছিল। যারা খুব বলবান ছিল। তাদের পুত্র ছিল না বলে তারা তপস্যা করতে গেলো পঞ্চনদে। একজন অগ্নিতে আরেকজন জলে দাঁড়িয়ে মালবট যক্ষ কে স্মরণ করছিল। ইন্দ্র কুমীর সেজে এসে করম্ভকে, যে কিনা জলে দাঁড়িয়েছিল, তাকে জলের তলায় টেনে মেরে ফেললো।যে অগ্নিতে তপস্যা করছিল সেই রম্ভ ভাইয়ের এরকম মৃত্যুতে ক্ষেপে গেলো।
infact এই রম্ভ হোল মহিষাসুর এর বাপ।
আপাতত আমার প্রশ্নঃ
১) মহিষাসুর তো না হয় খুব খারাপ, কিন্তু ইন্দ্র কোথাকার মহাপুরুষ? দুজন তপস্যা করছিল দেখেই ইন্দ্রানুভুতিতে এমন আঘাত লেগে গেলো যে একজনকে cheating করে লুকিয়ে এসে মেরে ফেলতে হল??
২) যে ইন্দ্র এইরকম কাপুরুষ এবং বদমাইশ সে যদি দেবতাদের রাজা হয়, তাহলে তাকে মহিষাসুর পেটালেই দোষ কেন হবে?? মহিষাসুর তো অন্তত যুদ্ধ করেছে, ইন্দ্রের মতো দুইনাম্বারি তো করেনি।। তাহলে??
(2)
এবার একটু পরবর্তীতে আসি।
ततस्तु देबा महिषेन निर्ज्जिता स्थानानि स॑त्यज्य सबाहनायुधा/...... ..... ...../तस्माच्च जाता तरलायताक्षी कात्यायनी योगबिशुद्धदेहा...
অর্থ ঃ মহিষাসুর বড় হয়ে গেছে। আর স্বাভাবিকভাবেই দেবতাদের খুব পিটাচ্ছে। দেবতারা বেধড়ক পিটুনি খেয়ে ব্রহ্মার কাছে গিয়ে কান্নাকাটি করায় ব্রহ্মা তাদের নিয়ে শ্রী বিষ্ণু যেখানে শ্রী অনন্তনাগের উপর শ্রী ঘুম দিচ্ছিলেন সেখানে গেলে দেখা গেলো মহাদেব ও সেখানে উপস্থিত। কেন উপস্থিত সেটা জানা যায় না। ডুগডুগি সারাতেও এসে থাকতে পারেন। মোটকথা সেটা তাদের ব্যাক্তিগত ব্যাপার বলেই মনে করছি। যাই হোক তারপর ক্রন্দনরত বীর দেবতাদের মারধর খেয়ে পালাবার ঘটনা শুনে ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শিব মিলে তেজ উদ্গীরন করে আয়তলোচনা সুন্দরী দেবী কাত্যায়নীর সৃষ্টি করলেন মহিষাসুর দমনকল্পে।
এখান থেকে আমার প্রশ্ন শুরু...
১) বিষ্ণু এতো উত্তেজিত হলেন কেন? পুতুল সরকার নড়ে যাচ্ছে দেখে??এখানে অনেকে বলতে পারেন অসুররা খারাপ। আমার বক্তব্য হোল কাতটা খারাপ?? যে বিষ্ণু ছক করে দানবদের দিয়েও সমুদ্রমন্থন করালেন তারপর just জোচ্চুরি করে তাদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করলেন সেই cheating ভালো হোল কিসে?? বলী বেচারা দিব্যি ধার্মিক। খালি বাহুবলে ইন্দ্রকে তারিয়ে দিয়েছিল বলেই তাকে পাতালে পুতে দেওয়া হল, সেটাও জোচ্চুরি করে। তাহলে খারাপ কে এবং কতটা?? ক্ষাত্রতেজ দেখানো বেশী খারাপ নাকি জোচ্চুরি??
২) না হয় মানলাম মহিষাসুর বরলাভ করে পুরুষের অবধ্য। কিন্তু তাই বলে একটা মহিশাসুরকে মারতে এতগুলো বৃহৎ দেবতার তেজ লাগলো কেন?? এটা না মানার কারনই নেই যে ইন্দ্ররা pure অপদার্থ। ব্রহ্মা বেচারা বৃদ্ধ। কিন্তু বিষ্ণু বা শিব কারো একার ক্ষমতা হল না যাতে একার তেজ দিয়ে এমন একটি বীরাঙ্গনা সৃষ্টি করা যায় যে কিনা অসুর দমনে সমর্থ?? তাহলে এটা ধরে নেওয়া কি খুবই অস্বাভাবিক যে, আসলে কাব্যের আড়ালে মহিষাসুরকেও সপ্তরথী বেষ্টিত অভিমন্যু style এ খতম করা হয়েছিলো?? সিবিআই তদন্ত চাওয়া কি অন্যায় হবে??..
(3)
তাহলে উপরের দুই পর্বে এটা অন্তত পরিষ্কার যে মহিষবাবু এমন কিছু করেননি যা কিনা দেবতারা খারাপ বলতে পারেন। কারন তারা নিজেরাই ওর থেকে অনেক বেশি বেশি জোচ্চুরি করে বসে আছেন। এবার কথা হল এই সময় আরেকটা কথা উঠবে যে , স্বর্গে তো ভাই ইন্দ্র তাঁত বুনে খাচ্ছিল মহিষাসুর কেন তাকে গিয়ে মারল? মহিষাসুর এর জন্য তো পাতালরাজ্য ছিল।
এখানে পাল্টা প্রশ্ন মহিষাসুরের কাকাকে ইন্দ্র মারল কেন? সে বেচারা তো পুত্রার্থে তপস্যা করছিল??
আচ্ছা বাপু যদি ধরে নিই দানবদের দেবতারা যখন খুশি মারতে পারে লুকিয়ে চুরিয়ে তাতে দোষ নেই, কারন দানবরা অত্যাচারী, তাহলে আরেকটা প্রশ্ন কংশকে কি অত্যাচারী বলা যায় না?
জবাব আসবে নিশ্চই যায়। ও ব্যাটা তো শিশুহত্যাকারী। নিজের গদি বাঁচাতে নিস্পাপ শিশুদের খুন করছিল। ও ব্যাটা তো দানব। দানবদের সেই কারনেই তো মারা উচিত। সেইকারনেই তো... ইত্যাদি ইত্যাদি...
এখানে একটা গল্প ছোট করে বলি। কোন এক দেব দানবীয় যুদ্ধে সব দানবকে মেরে ফেলেন ইন্দ্র তথা দেবতারা। তারপর দানবীমাতা দিতি তার স্বামী কশ্যপ এর থেকে ইন্দ্রের থেকেও শাক্তিশালী পুত্রবর চান এবং पौर्न्मसि ब्रत ব্রত করেন। অবশেষে যখন পুত্র জন্মাবার ৩ দিন বাকি, দিতি পা ধুতে ভুলে যান। সেই সুযোগে ইন্দ্র দিতির গর্ভে প্রবেশ করেন।
বলুন তো কেন? দিতির গর্ভের পুত্রটি যেহেতু তার চেয়ে শক্তিশালী তাই তার গদি বাঁচাতে তাকে হত্যা করতে! এবং ব্জ্র দ্বারা সেই গর্ভস্থ শিশুটিকে ৭ টুকরো করেন। তাতেও তারা মরছে না দেখে প্রত্যেকটি টুকরোকে আরও ৭ টুকরো করেন!! তারপর তারা কাঁদছে দেখে म रुदद्ध्म বলে তাদের কণ্ঠ বন্ধ করেন!!!
তাহলে এবার আমার প্রশ্ন ঃ
১) কংশ যদি বর্বর হয় তাহলে ইন্দ্র কি??
২) শ্রী কৃষ্ণ যদি তার শ্রী মামা কে শাস্তি স্বরুপ হত্যা করতে পারেন, তাহলে মহিষাসুর ইন্দ্রকে শাস্তিস্বরূপ কান মুলে পিটালে সেটা তো অত্যন্ত ভালো কাজ বলেই পরিগনিত হওয়া উচিত, তাই নয় কি??
(4)
তাহলে এখনো পর্যন্ত যা দেখা গেলো তাতে মহিষাসুর এর বিরুদ্ধে দেবতারা একমাত্র নিজেদের দুর্গতি ছাড়া আড় কারো দুর্গতির অভিযোগ তুলতে পারছেন না। এবার আমার বক্তব্য দেবী দুর্গার বীরত্ব নিয়ে... এখানে একটা কথা বলে রাখা ভালো যে আমি দেবী দুর্গার নারী হিসাবে সাহসিকতাকে বেশ একটা ভালো রুপক মনে করি। যে মেয়েরা নিজেদের দুর্বল বলে ভেবে ভয়ে আধমরা থাকেন তাদের এটা থেকে এই শিক্ষাটুকু নেওয়া উচিত যে অস্ত্র ধরতে জানলে দৈহিক দুর্বলতা কোন ব্যাপারই না। কিন্তু মুশকিল হোল সেই নারী যখন জয়ী হবার পর "পুরুষের তেজ দ্বারা নির্মিত" বলে খ্যাত হন তখন সেটার সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে বিশ্লেষণ করতেই হয়। ;)
আগেই বলেছি কোন দেবতার এমন সাধ্য হয় নি একার তেজে এমন একটি নারী সৃষ্টি করতে যিনি মহিষাসুরকে বধ করতে পারেন, তাই "অনেকে মিলে সপ্তরথী বেষ্টিত অভিমন্যু এর মত মহিষাসুরকে বধ করেনি একটি নারীর টোপ দিয়ে" এই সন্দেহ একে বারে ফেলে দেবার মত নয়। ;)
এবার আসল কথায় আসি। এতজনের তেজ দ্বারা সৃষ্ট দেবী কিন্তু একা যুদ্ধ করেন নি।
ततोट्ठहास॑ मुमुचे नाद्रिशे बाधता॑ गते/ हास्यात् स्मुद्भब॑स्तस्या भुता नानाबिधाद्भुता/ ......./ सा नैर्भुतगनै देबी सार्द्ध तददानबबलम॑/ सातयामास चाक्रस्य यथा सय॑ महाशनि...
অর্থাৎ দেবীর হাসিতে ভুত উৎপন্ন হল যাদের বিকট দেখতে। এবং তাদের নিয়ে দেবী মহাতেজে অসুরদের আক্রমণ করলেন। :) :P
অবশেষে সব অসুর মারা গেলে মাহিশাসুর নিজে যুদ্ধে আসলেন।
देब्या महौजा महिसासुरस्तु ब्य्द्रबयद् भुतगनान् खुराग्रे/......./बज्र॑सुरेन्द्र्स्य च बिग्रहेस्य मुक्त॑ सुसूक्षमत्यमुपाजगाम् ...
অর্থাৎ সব অসুর মারা যাচ্ছে দেখে মহিষাসুর নিজেই যুদ্ধে এলেন। দেবীর ভুতদের পিটিয়ে তাড়িয়ে দিলেন। তাই দেখে দেবী কুপিতা হয়ে শুল নিক্ষেপ করলেন এবং যা মহিষাসুর ব্যর্থ করল। এইভাবে একে একে সব অস্ত্র এমনকি ইন্দ্রের বজ্র পর্যন্ত টুকরো করে দিল মহিষাসুর। ;) এখান থেকে ছোট্ট turn.. পুরুষালী অস্ত্র ব্যর্থ হবার পর দেবী যেটা করলেন তার বর্ণনা যেভাবে দেওয়া হয়েছে লিখে দিলাম...
सन्तज्य सि॑ह महिसासुरस्य दुर्गाधिरुढा सहसेब प्रिस्ठ्म्/ प्रिस्ठास्थितया महिसासुरपि पोप्लुयते बीर्यमदाम्ऱडान्याम/ सा चापि पदभा॑ म्ऱ्दुकोमलाभ्या॑ ममर्द त॑ क्लिन्नमिबाजित॑ हि/ स मुझ्यमानो धरनीधराभओ देब्या बलि हीनबलो बभुब...
অর্থাৎ সব অস্ত্র ব্যর্থ দেখে দেবী সিংহ ছেড়ে মহিষাসুর এর পিঠে উথে বসলেন... ;) দৈত্য যখন তাতেও শান্ত হল না তিনি তার "কোমল" পা দিয়ে মহিষাসুরের "পিঠ" "মর্দন" করতে লাগলেন। তাতে মহিষাসুর "হীনবল" হয়ে গেল। 3:) তারপর দেবী শুল দিয়ে তাকে আঘাত করলেন... ইত্যাদি।
এবার আমার প্রশ্নগুলো ঃ
১) এতগুলো পরম দেবতার তেজ অস্ত্র পাবার পরও ভুতবাহিনী লাগলো??
২) সমস্ত বিরাট বিরাট অস্ত্র, যেমন শুল, কালদন্ড, গদা, বজ্র ইত্যাদি ইত্যাদি এমনকি স্বয়ং বিষ্ণুর চক্র পর্যন্ত যে অনায়াসে ব্যর্থ করে ভেঙ্গেচুরে একাকার করে দিল সে যে যে মুহূর্তে সুন্দরী নারীর "কোমল" পায়ের দ্বারা "মর্দিত" হল অমনি "হীনবল" হয়ে গেলো কিভাবে?? :P
[by the way.. "কোমল" "মর্দন" "হীনবল" কথাগুলি original script এ ঠিক ওইভাবেই আছে যেভাবে আমি লিখেছি।]
(5)
বলা হল তিনি জগজ্জননী। এখানে মুশকিল। কারন শাস্ত্র অনুযায়ী অসুররা জগতের বাইরের কেউ না। তাই জগজ্জননী হতে গেলে অসুরদেরও জননী হতে হয়। অনেকে বলবেন ... সেইকারনেই দুর্গা অসুরকে বধ করেন নি... তাহলে আসুন দেখি original script কি বলে... ;)
निस्क्रान्तमात्र॑ ह्र्द्ये पदा त॑ आहेत्य स॑ग्रेह कचेशु कोपात्/ शिर: प्रचिछ्येद बरासिनस्य हाहाक्रित॑ दैत्यबल॑ तदात्भुत॑..
অর্থাৎ পুরুষটির হৃদয়ে চরণ দ্বারা আঘাত করে চুলের মুঠি ধরে শ্রেষ্ঠ তরবারি দিয়ে তার মুণ্ডু কেটে ফেলেন। মাহিশাসুর কে মারা যেতে দেখে দৈত্যরা হাহাকার করতে লাগলো।
এখানে আমার তেমন কোন প্রশ্ন নেই। যুদ্ধ করতে এসেছেন। শ্ত্রুবধ করেছেন। ঠিক আছে। কিন্তু "জননী" যাই শাস্তি দিন না কেন, সন্তানকে মেরে ফেলতে পারেন কি?? আরও এমন এক সন্তান যে তার কাছে তেমন কোন দোষই করেনি। আগের পর্ব দেখলে বোঝা যাবে দেবতাদের তুলনায় সে সাক্ষাৎ মহাপুরুষোচিত নায়ক।
অনেকে বলবেন না এক্ষেত্রে "জননী" তার সন্তান কে ক্রুদ্ধা হয়ে খুন করেছেন (মহিষাসুর বিরাট দোষী একথা আগের পর্বগুলো যারা পড়েছেন তারা নিশ্চয়ই বলবেন না) তাহলে দেবতাদেরই একটা ঘটনা উদাহরন হিসাবে দেখাই।
সূর্যের প্রথম স্ত্রী দুই পুত্র সন্তান (মনু এবং যম) রেখে বাপের বাড়ী চলে যান। যাবার আগে তারই মতো হুবহু দেখতে একজনকে রেখে যান। তার নাম ছায়া। তার দুই পুত্র (সাবর্ণি এবং শনি) হবার পর সে সতীনপুত্রদের অবহেলা করতে থাকে। তাই যম একদিন খেপে গিয়ে তাকে লাথি মারার হুমকি দেয়। তাতে ছায়া যমকে অভিশাপ দেন যে "যমের পা খসে পড়ুক"।
তাতে যম কাঁদতে কাঁদতে গিয়ে সূর্যকে নালিশ করে বলে "হে পিতা, কোন মা কি কখনো সন্তানের ক্ষতির অভিশাপ দিতে পারেন?" সূর্যবাবু সেটা মেনে নিয়ে এসে ছায়ার চুল ধরে পেটান।
একথা বলার কারন একটাই, এটা দেখানো যে দেবতারা নিজেদের বেলায় খুব বোঝেন যে মা অভিশাপই দিতে পারেন না সন্তানকে, মেরে ফেলা তো প্রশ্নই নেই।
তাহলে দেবী দুর্গা কেমন করে "জগজ্জননী" হলেন?? :)
আপাতত সব দেখেশুনে আমি বুঝলাম যে এই সম্পূর্ণ ব্যাপারটা মহিশাসুরের বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র। এবং সুষ্ঠু নিরপেক্ষ বিচারে দুর্গা দেবী কিছুতেই পুজ্যা এবং "জগজ্জননী" হতে পারেন না। "দুর্গতিনাশিনী" যে কিসের দুর্গতি নাশ করলেন, সেটাওপরিষ্কার নয়। দেবতারা ষড়যন্ত্র করে একজন মহান বীর ( যার খালি একটু মেয়েঘটিত ইয়ে ছিল, সে তো সব দেবতারই আরও বেশী বেশী ছিল) এর নামে কুৎসা করেছেন। এবং আমি সেই সর্বহারা মহিষের ছানার প্রতি তীব্র সহমর্মিতা জানিয়ে আমার বক্তব্য শেষ করছি।
No comments:
Post a Comment